নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম সম্পর্কে যারা জানেন না তাদের জন্য আজকের এই পোস্ট। আজকের পোস্টে আমরা আপনাকে দেখিয়ে দিবো কিভাবে নতুন মিটারের জন্য দরখাস্ত করতে হয়, নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র বা পল্লী বিদ্যুৎ নতুন মিটারের আবেদন পত্র। আপনি যদি নতুন মিটারের জন্য আবেদন না করতে জানেন, তাহলে মনোযোগ দিয়ে আজকের লেখাটি পড়ুন।
বাংলাদেশের বর্তমানে ৯৫% মানুষের বাড়িতে বিদ্যুৎ হয়েছে। তাই স্বাভাবিক ভাবে আমাদের প্রতিটি কাজে বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বলতে গেলে, বিদ্যুৎ ছাড়া আমরা এক প্রকার অচল। যাদের এলাকায় বিদ্যুৎ আছে কিন্তু বাড়িতে বিদ্যুত নেই তারা চাইলে অনলাইনে বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করতে পারেন।
যারা পল্লী বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তাদের প্রায় সময় কোন না কোন কারনে মিটার পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ে। তাই তারা খুব সহজে নতুন মিটারের জন্য আবেদন করতে পারেন। নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার জন্য নিচের নিয়মগুলো অনুসরন করুন। আমরা নতুন মিটারের জন্য আবেদন করার নিয়ম বিস্তারিত দেখিয়ে দিয়েছি।
নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম
অনলাইনে বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করার জন্য প্রথমে http://www.rebpbs.com এই অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। তারপর একটা ফরম পুরন করতে হবে। ফরমটি পুরন করার পরে, মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আবেদন ফি পরিশোধ করতে হবে।
তবে তার আগে অনলাইনে বিদ্যুৎ মিটারের জন্য আবেদন করার জন্য আপনাকে কিছু পেপার জোগাড় করতে হবে। কিছু নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট জোগাড় করতে হবে। তারপর উপরে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে নতুন মিটারের জন্য আবেদন করতে হবে।
আরও পড়ুন – ৫০০০ টাকার মধ্যে ভালো মোবাইল
নতুন মিটার আবেদন করার জন্য কি কি কাগজের প্রয়োজন পড়বে
অনলাইনে বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করার জন্য আপনাকে কিছু পেপার আগে থেকে জোগাড় করতে হবে। অনলাইনে মিটার আবেদন করতে কি কি পেপার লাগবেঃ
১. আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র।
২. আবেদনকারীর নাম ও ফোন নাম্বার।
৩. আবেদনকারীর ঠিকানা।
৪. কোথায় বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে চাচ্ছেন তার ঠিকানা।
৫. ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র কপি।
৬. যেখানে বিদ্যুত সংযোগ দিতে চাচ্ছেন সেই জমির দাগ নাম্বার, খতিয়ান নাম্বার।
৭. পাশের বিদ্যুৎ পুল থেকে আপনি যেখানে বিদ্যুৎ মিটার নিচে চাচ্ছেন সেখান পর্যন্ত সঠিক মাপ।
৮. আশেপাশে যে বাড়িতে বিদ্যুৎ আছে সেই মিটারের নাম্বার এবং হিসাব নাম্বার।
৯. সংযোগস্থলে ব্যবহৃত লোডের সংখ্যা (লোড বলতে বুঝানো হয়েছে TV, Fridze, Fan, light, AC, Rice Cookers ইত্যাদি)
১০. যে জমিতে বিদ্যুৎ মিটার নিতে চাচ্ছেন সেই জমি অন্য কারও নামে হলে, তার ওয়ারিশ কাম সার্টিফিকেট ফটোকপি করে জমা দিতে হবে।
১১. House Waring নিশ্চিত করার জন্য পূর্বে Grand Memo ছবি স্ক্যান কপি সংগ্রহ করে রাখতে হবে।
নতুন মিটারের জন্য আবেদন করার শর্তাবলী
নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার আগে নিচের শর্তাবলীগুলো অবশ্যই জেনে রাখতে হবে। নাহলে মিটার আবেদন করতে যেয়ে নানান সমস্যায় পড়তে হবে।
১. অনলাইনে বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করার জন্য আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র ছবি, নিজের ছবি সংযোগ স্থানেন খারিজের স্ক্যান কপি জমা দিতে হবে।
২. যেখানে বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করতে চাচ্ছেন সেখান থেকে বিদ্যুতের পুল ১৩০ মিটারের মধ্যে হতে হবে।
৩. সঠিকভাবে উপরের মাপটি দিবেন। নাহলে পরে অনেক বেশি বিড়ম্বনার স্বীকার হতে পারেন।
৪. যেখানে বিদ্যুৎ মিটার নিতে চাচ্ছেন সেখানে যদি ৮০ কিলোওয়াট এর বেশি বিদ্যুৎ লোড হয় তাহলে সেখানে HT বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে হবে।
৫. অনলাইনে আবেদনের পরে আবেদন ফি, মেম্বারশিপ ফি ও নিরাপত্তা জামানাত সবকিছু SMS এর মাধ্যমে পাঠানো হবে। তাই সেগুলো অবশ্যই সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।
৬. নতুন মিটার আবেদনের পূর্বে উপরের নিয়মগুলো অবশ্যই জানতে হবে। নাহলে আপনাকে নতুন বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করতে যেয়ে অনেক বিড়ম্বনার স্বিকার হতে হবে।
নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম
নতুন মিটারের জন্য আবেদন করার জন্য প্রথমে আপনাকে https://www.rebpbs.com/ এই লিংকে ক্লিক করতে হবে। এটি বিদ্যুৎ মিটার আবেদন করার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট। ওপরের ওয়েবসাইটে ক্লিক করে সমস্ত তথ্য পুরন করে অনলাইনে ফরমটি জমা দিতে হবে। নতুন মিটারের জন্য অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম নিচে ধাপে ধাপে দেখানো হলো।
ধাপ ১ঃ আবেদন ফরম পূরন
অনলাইনে আবেদন করার জন্য প্রথমে http://www.rebpbs.com/ এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। তারপর নিচের ছবির মত জায়গায় আপনাকে নিয়ে আসবে। সেখান থেকে একে একে সকল তথ্য সঠিকভাবে পুরন করতে হবে। যে লেখাগুলোর পাশে (*) এমন চিহ্ন রয়েছে সেইগুলো অবশ্যই পুরন করতে হবে। উপরের লিংকে ক্লিক করার পরে যে যে তথ্যগুলো অবশ্যই দিতে হবেঃ
- বিদ্যুৎ অফিসের বিবরণ ও সংযোগ।
- আবেদনকারীর সকল বিবরণ
- স্থায়ী ঠিকানা ও প্রস্তাবিত বিদ্যুৎ সংযোগের ঠিকানা।
এই ছাড়াও আরও অনেক তথ্য রয়েছে যেগুলো আপনাকে পুরন করতে হবে। একে একে সকল তথ্য পুরন করে “সংরক্ষণ করুন” এই বাটনে ক্লিক করুন।
এবার আপনার মোবাইলে SMS এর মাধ্যমে অথবা PDF Slip হিসেবে একটি পিন নাম্বার ট্যাকিং আইডি নাম্বার প্রদান করা হবে। এইগুলো অবশ্যই সংরক্ষণ করে রাখবেন। পরবর্তীতে খুব বেশি দরকার হয়ে পড়বে এগুলো।
ধাপ ২ঃ হাউজ ওয়্যারিং এর জন্য আবেদন ও নিশ্চিতকরণ
আপনার মিটারের হাউজ ওয়ারিং নিশ্চিত করার জন্য http://www.rebpbs.com এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে উপরের দিকে “আবেদন” দেখতে পাবেন।
আবেদনে ক্লিক করলে “হাউজ ওয়ারিং নিশ্চিত করুন” মেনুটি সিলেক্ট করুন। যেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে চাচ্ছেন সেখানে সংযোগ দেওয়ার জন্য এই কাজটি করতে হবে।
হাউজ ওয়ারিং নিশ্চিত করুন এই লিংকে ক্লিক করার পরে উপরের ছবির মত একটা জায়গা দেখতে পাবেন। সেখান থেকে প্রথমে ট্রাকিং নম্বর এবং পরবর্তীতে পিন নম্বর বসিয়ে দিয়ে “সাবমিট করুন” বাটনে ক্লিক করুন।
পিন নাম্বার ও ট্যাকিং নাম্বার আবেদনপত্রে দেওয়ার পরে SMS এর মাধ্যমে অথবা আবেদন স্লিপ এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
এরপরে Grand Rod Cash Memo Upload করে যথাক্রমে সংযোগস্থল তথা বাড়ির Address বসিয়ে দিয়ে ভেরিফিকেশন ক্যাপচাটি পূরণ করে “সমর্পণ করুন” বাটনে ক্লিক করুন। কিছুক্ষণ পরে SMS এর মাধ্যমে সঠিকভাবে হাউজ ওয়্যারিং এর জন্য আবেদন করা হয়েছে সেটি জানিয়ে দেওয়া হবে।
৩য় ধাপঃ সংযোগ ফি পরিশোধ
নতুন মিটারের জন্য আবেদর করার পরে এবং হাউজ ওয়ারিং নিশ্চিত করার পরের ধাপ হলো সংযোগ ফি পরিশোধ করা। এই সংযোগ ফি ২ ভাবে প্রদান করা যায়। ১. অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিং রকেটের মাধ্যমে ও ২. সরাসরি বিদ্যুৎ অফিসে যেয়ে জমা দিয়ে।
উপরে দেখানো নিয়ম অনুযায়ী রকেট মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ ফি প্রদান করতে পারবেন। অথবা, http://www.rebpbs.com/Default.aspx এই লিংকে ক্লিক করে অনলাইনে বিদ্যুৎ সংযোগ বিল ফি প্রদান করতে পারবেন।
তাছাড়া সরাসরি বিদ্যুৎ অফিসে যেয়ে সংযোগ ফি প্রদান করতে পারবেন। সেই ক্ষেত্রে পিন নাম্বার ও ট্রাকিং নাম্বার প্রয়োজন হবে।
পল্লী বিদ্যুৎ মিটার আবেদন ফি কত টাকা
উপরের দেখানো নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য আবেদন করার পরে আবেদনপত্রটি নিয়ে নিজের এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জমা দিতে হবে। আবেদনপত্র জমা দেওয়ান জন্য আপনাকে ১১৫ টাকা ফি প্রদান করতে হবে। এবং মিটার হাতে পাওয়ার জন্য আপনাকে পল্লী বিদ্যুত সমিতির নির্দিষ্ট ফি ৪৫০ টাকা প্রদান করতে হবে। অর্থ্যাত আপনাকে নতুন মিটার আবেদন করার জন্য ১১৫ টাকা ও মিটার হাতে পাওয়ার জন্য ৪৫০ টাকা প্রদান করতে হবে।
আমরা উপরে নতুন মিটারের জন্য আবেদন পত্র, নতুন মিটারের জন্য দরখাস্ত, নতুন মিটার এর আবেদন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। উপরের আলোচনা থেকে কোথাও বুঝতে সমস্যা হলে নিচে কমেন্ট করে জানান। আমরা আপনাকে দেখিয়ে দিবো।