আপনারা যারা বাইরের দেশে ঘুরতে যাচ্ছে বা কাজ করেন প্রবাসী আছেন বা হজ্বে যাচ্ছে চাইলে কিন্তু আপনার দেশের সিমটা বিদেশে গিয়ে ব্যবহার করতে পারবেন। অর্থাৎ লোকাল নাম্বারের কল গুলো রিসিভ করতে পারবেন বা লোকাল নাম্বারে বিদেশে থেকে দেশে কল করতে পারবেন। জানি বিষয়টা অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে কিন্তু রোমিং একটি সার্ভিস আছে যেটা অন করলে এই সুবিধাটা আপনারা বুক করতে পাবেন।
রোমিং সার্ভিসটি অনেক অপারেটররা দিচ্ছে কিন্তু আমার কাছে গ্ৰামিনফোনের সার্ভিসটি সব থেকে ভাল মনে হয়েছে। কারন গ্ৰামিনফোনের রোমিং সার্ভিসটা আপনারা মাইজিপি অ্যাপ থেকে কোন কাগজপত্র ছাড়া কাষ্টমার কেয়ারে না গিয়ে খুব ইজিলি ব্যবহার করতে পারবেন। গ্ৰামিনফোন কোম্পানি হজ্বযাত্রী বা প্রবাসীদের জন্য খুব ভাল একটি সার্ভিস দিচ্ছে এবার। তো চলুন দেখে নেওয়া যাক মাইজিপি অ্যাপ থেকে কিভাবে রোমিং সার্ভিস অন করবেন।
রোমিং সার্ভিসটি চালু করতে যা যা প্রয়োজন:
১. একটি সচল জিপি সিম কার্ড যেটা আপনি দেশে বা দেশের বাইরে (বিদেশে) ব্যবহার করবেন।
২. Play store থেকে MyGP অ্যাপটা ডাউনলোড করে নিবেন।
৩. যেহেতু এটি একটি ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস তাই সিমে টাকা লোড করার জন্য মাস্টারকার্ড বা ইন্টারল্যাশনাল যেকোন কার্ড।
ধাপ-১: রোমিং সার্ভিসটি চালু করার জন্য সর্বপ্রথম আপনার হাতে থাকা ফোন থেকে Play Store এ চলে যাবেন।
ধাপ-২: Play Store এ সার্চ করবেন My GP । সার্চ করার সাথে সাথে ওপরে ছবিতে দেখানো এমন একটি অ্যাপ পাবেন। অ্যাপটা আপনারা ইনস্টল করে নিবেন।
ধাপ-৩: ইনস্টল হওয়ার পর অ্যাপটি ওপেন করবেন এবং দেখবেন ওপরের ছবির মতো একটি ইন্টারফেস চলে আসছে। এখান থেকে Sian in এ ক্লিক করবেন।
ধাপ-৫: কনটিনিউ বাটনে ক্লিক করার পর ওপরের ছবির মতো একটি ইন্টারফেস আসবে। এখানে একটি ভেরিফিকেশন কোড দিতে হবে। আপনি যে সিমকার্ডের নাম্বার দিয়েছিলেন সেই সিমে একটি কোড যাবে কোডটি আপনার এখানে টাইপ করে Continue অপশনে ক্লিক করবেন।
ধাপ-৬: সিমকার্ড দিয়ে রেজিস্ট্রেশন সম্পূর্ণ হওয়ার পর আপনারা মাইজিপি অ্যাপের মূল পেইজে ঢুকতে পারবেন। রোমিং সার্ভিসটি চালু করার জন্য ওপরের ছবিতে দেখানো নিচের দিকে Services বলে একটি অপশন পাবেন এটার ওপরে ক্লিক করবেন।
ধাপ -৭: সার্ভিসে ক্লিক করার পর ওপরে ছবির মতো একটি ইন্টারফেস দেখতে পাবেন। রোমিং সার্ভিস চালু করার জন্য Roaming লেখার ওপরে ক্লিক করবেন।
ধাপ-৮: রোমিং এ ক্লিক করার পর দেখবেন ওপরের ছবির মতো এমন একটি ইন্টারফেস সো করবে। গ্ৰামিনফোন থেকে এখানে অনেক গুলো নোটিশ দিয়েছে আপনার পারলে একটু পড়ে নিবেন। পড়া শেষে আপনার Choose Roaming Type লেখাটির ওপরে ক্লিক করে দিবেন।
ধাপ-৯: ৮নং ধাপ কম্পিলিট হওয়ার পর ওপরের ছবির মতো একটি ইন্টারফেস দেখতে পাবেন। এখান থেকে আপনারা শুধু Voice,SMS বা SMS বা Data, Voice, SMS তিনটা একসাথে কিনতে পারবেন আবার চাইলে একটা একটা কিনতে পারবেন তার জন্য ওপরে অপশন দেওয়া হয়েছে। এই Data,Voice,SMS কিনতে হলে আপনার বাংলাদেশি টাকা ব্যবহার করতে পারবেন না। যেহেতু এটা একটি ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিস তাই ডলার দিয়ে এই প্যাকেজ গুলো কিনতে হবে। আপনি যতো ডলার লোড দিবেন এখানে সেই সংখ্যা টাইপ করে Continue to Payment বাটনে ক্লিক করবেন।
ধাপ-১০: টাকা লোড করার জন্য ওপরের ছবির মতো আপনাদের এমন একটি পেইজ দেখাবে। এখানে আপনাদের কার্ডের মাধ্যমে টাকা লোড করতে হবে। তবে যেকোন কার্ড দিয়ে আপনারা টাকা লোড করতে পারবেন না। এরজন্য মাস্টারকার্ড বা ইন্টারল্যাশনাল যেকোন কার্ড দিয়ে টাকা লোড করতে হবে। কার্ডের নাম্বার, কার্ডের নাম প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নিচে Pay বাটনে ক্লিক করবেন।
ধাপ-১১: এবার আপনাদের প্রশ্ন থাকতে পারে বাইরের দেশ থেকে দেশে লোকাল নাম্বারের কল করলে কত টাকা খরচ হতে পারে। আপনি যে দেশে থাকবেন সেই দেশ থেকে দেশে কল করলে বা আউটগোয়িং ইনকামিং কল কতো খরচ হবে সব কিছু দেখার জন্য ওপরের ছবিতে দেখানো Roaming Tariff অপশনটাতে ক্লিক করলে Google এ নিয়ে যাবে।
ধাপ-১২: Google এ আসার পর আপনার ওপরের ছবির মতো একটি ইন্টারফেস দেখতে পাবেন। আপনি যদি এশিয়া কোন দেশে থাকেন তাহলে এশিয়া ক্লিক করলে এখানে এশিয়ার সব দেশ দেখাবে। আপনি যেদেশে আছেন দেশটি সিলেক্ট করলে সব কিছু দেখতে পাবেন আউটগোয়িং ইনকামিং কলে কতো টাকা কাটবে SMS এর জন্য কতো টাকা কাটবে, ডাটা কিনতে কতো টাকা খরচ হবে সবকিছু এখানে দেখতে পারবেন। তবে সব দেশে কলরেট প্রায় একি প্রতি মিনিট ১০ টাকা। ১ মিনিট কথা বলতে আপনাকে বাংলা টাকা ১০ টাকা খরচ করতে হবে।
শেষ কথা: ওপরে দেখানো প্রসেসের মাধ্যমে আপনারা রোমিং সার্ভিস চালু করতে পারবেন। রোমিং সার্ভিসটি চালু হয় কিভাবে অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন। আমাদের দেশের সিম কোম্পানিগুলোর বাইরের দেশের সিম অপারেটরদের সাথে চুক্তি বদ্ধ থাকে যার কারনে রোমিং সার্ভিস চালু করে যে দেশে যাওয়া হবে সেখানে সেই সিমের ফুল নেটওয়ার্ক পাবে। আর রোমিং সার্ভিস চালু করে যদি ডাটা কেনা হয় বা কথা বলা হয় সেই টাকা যে দেশ থেকে কথা বলা হবে সেই দেশের সিম অপারেটর কোম্পানি কেটে নেয় ও ওই টাকার থেকে কিছু টাকা দেশের সিম কোম্পানিগুলোর পায়। প্রত্যেক দেশের সাথে চুক্তি বদ্ধ থাকার কারনে রোমিং সার্ভিস চালু করে বিদেশে গেলে তাদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার সুযোগ করে দেয় যার ফলে বিদেশে বসে দেশের সিম ব্যবহার করা যায় ও ফুল স্পিডে চালানো যায়।