ফ্রিল্যান্সিং করে আয়: ফ্রিল্যান্সিং করে যে কাজে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন | ফ্রিল্যান্সিং করে আয় – প্রায় যেকোন ধরনের কাজকে কেন্দ্র করে ফ্রিল্যান্সিং করা যায়। কিন্তু অনেকে জানেনা কোন কাজ গুলো নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করলে অনেক আয় করা যাবে। ফ্রিল্যান্সিং করে লাখ টাকা আয় করা যায়।
কিন্তু প্রথমে আপনাকে জানতে হবে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য কিসের প্রয়োজন। কেন এর চাহিদা এতো বেশি। ফ্রিল্যান্সিং কতো প্রকার এসব কিছু জেনেই কাজে নামলে আপনি সফল হতে পারবেন। এখানে ফ্রিল্যান্সিং করে যে কাজে বেশি টাকা আয় করতে পারবেন সেটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।
ফ্রিল্যান্সিং করে আয়
আরও পড়ুন – নারীদের জন্য ঘরে বসে ৮ টি লাভজনক ব্যবসা
কপিরাইটিংঃ
একজন ফ্রিল্যান্সার কপিরাইটার নিউজ লেটার, বিজ্ঞাপন, ই মেইল, আর্টিকেল ছাড়াও অন্যান্য আকর্ষনীয় লেখা লিখে থাকেন। কিন্তু কপিরাইটিং গিগ থেকে আয়ের পরিমান স্থানভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে একজন কপিরাইটার ঘন্টায় ১৯ ডলার থেকে ৪৫ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন। তবে এটা তার অভিজ্ঞতা অনুযায়ী হয়ে থাকে। এভাবে একজন ফ্রিল্যান্সারের মাসিক আয় নির্ধারিত হয়। ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করছে এখন অনেকে।
ওয়েব ডিজাইনিংঃ
এখন সবকিছুর ক্ষেত্রে ওয়েব সাইটের প্রয়োজন হয়।তবে এখন ওয়েব ডিজাইনের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। একজন ওয়েব ডিজাইনার ঘন্টায় ১৫/৩০ ডলার বা তারও বেশি আয় করে থাকে। ওয়েব সাইটটি ডিজাইন করার ক্ষেত্রে অধিক দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।
এটি ফ্রিল্যান্সিংয়ের একটি কাজ। ফ্রিল্যান্সিং করে একজন প্রচুর টাকা আয় করতে পারে। ২০৩০ সালের মধ্যে ওয়েব ডিজাইনার বাড়বে প্রায় ৩০ শতাংশ। তাই আপনি আপনার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে একজন ভালো ওয়েব ডিজাইনার হয়ে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিংঃ
একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এর কাজ হলো ব্যাবসা বা ব্যক্তির অনলাইন প্রজেক্ট বৃদ্ধি করে লিড জেনারেট করে সেলস বাড়ানো। কিন্তু সবকিছু করার আগে আপনাকে একজন দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। তাহলে ফ্রিল্যান্সিং করে ইনকাম করা যাবে।
ই মেইল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, অনলাইন বিজ্ঞাপন ইত্যাদি বিষয় একজন ডিজিটাল মার্কেটিং ম্যানেজার হওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দক্ষতা। একজন ডিজিটাল মার্কেটিং ঘন্টায় অনেক টাকা ইনকাম করতে পারে। ঘন্টায় প্রায় ১৫/৪৫ ডলার আয় করতে পারে।
কপি এডিটিংঃ
কপি এডিটিং হলো লেখা রিভিউ বা রিভাইস করা। লেখার বিভিন্ন দিক যেমন – সিনট্যাক্স, পাংচুয়েশন, স্টাইল ইত্যাদি দেখার পাশাপাশি প্রদত্ত তথ্য সঠিক আছে কী না তা একজন এডিটর চেক করেন। একজন এডিটর হতে গেলে অবশ্যই অন্য কারো থেকে নিজের লেখাটা আরো উন্নত করতে হবে। হাই কোয়ালিটি এডিটর তৈরি করতে একজন কন্টেইনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। একজন এডিটর ঘন্টায় প্রায় ২০ থেকে ৪০ ডলার আয় করেন।
ওয়েব ডেভেলপমেন্টঃ
একজন ওয়েব ডেভেলপার তার এডভান্সড প্রোগ্রামিং স্কিল ব্যবহার করে ওয়েব সাইট তৈরি করেন।ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে সাধারণত ফ্রন্ট এন্ড বা ফুল স্ট্যাক ডেভেলপার হতে হয়। এসব করার জন্য আপনাকে অনেক দক্ষ হতে হবে।
ফ্রন্ট এন্ড ডেভেলপার ওয়েবসাইটের বাহ্যিক দিক গুলো – ডিজাইন ও ভিজ্যুয়াল ইত্যাদি দেখাশোনা করেন। কিন্তু একজন ফুল স্ট্যাক ডেভেলপার সব বিষয়ে পারদর্শী হতে হয়। একজন ওয়েব ডেভেলপার ঘন্টায় প্রায় ১৫/৩০ ডলার আয় করেন।
মিডিয়া বায়িংঃ
নির্দিষ্ট বাজেট ও প্রয়োজনের ওপর ভিত্তি করে কোন ব্যবসার এড প্লেসমেন্ট ঠিক করতে সাহায্য করেন একজন মিডিয়া বায়িং এক্সপার্ট। একজন মিডিয়া বায়ার এক্সপার্ট তার ক্লায়েন্টের জন্য সেরা বিজ্ঞাপনের সুযোগ খুজে দেওয়ার কাজ করে থাকেন। এই এড বা বিজ্ঞাপন হতে পারে ফিজিক্যাল, প্রিন্ট বা ডিজিটাল মিডিয়ার জন্য।একজন মিডিয়া বায়িং এক্সপার্ট ঘন্টায় ৫০ থেকে ২০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
ডাটা এনালাইসিসঃ
অধিকাংশ কোম্পানির ইন হাউজ ডাটা এনালিস্ট থাকলেও ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম গুলোতে ডাটা এনালিস্ট এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। ডাটা এনালিস্টের কাজ অনেক। এটি করতে প্রচুর দক্ষতা প্রয়োজন। একজন ডাটা এনালিস্ট ঘন্টায় ২০ থেকে ৫০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
বিজনেস কনসালটেন্সিঃ
বিভিন্ন ব্যবসায়িক চ্যালেন্স মোকাবেলায় বিজনেস কনসালটেন্ট হায়ার করে থাকেন বিভিন্ন কোম্পানি। তারা তাদের আয় বৃদ্ধি করার জন্য বিজনেস কনসালটেন্ট করে থাকেন। বিজনেস কনসালটেন্ট মূলত ব্যবসা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা প্রদান করে থাকে। এটি থেকে প্রায় ২৮/৯৮ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায়।
প্রোগ্রামিংঃ
প্রোগ্রামার সাধারণত প্রোগ্রাম লেখার মাধ্যমে কম্পিউটার ও মোবাইলের জন্য বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ তৈরি করে থাকেন। এছাড়া একজন প্রোগ্রামার বিভিন্ন ধরনের রুটিন ও টেকনিক্যাল সমস্যা ঠিক করার কাজও করে থাকেন। প্রোগ্রামিং ফ্রিন্সাং গিগ গুলো সাধারণত ১৫ থেকে ৩০ ডলার পর্যন্ত আয় করে।
ভার্চয়াল অ্যাসিট্যান্সঃ
ডাটা এন্ট্রি, ক্যালেন্ডার অরগানাইজেশান বা ই মেইল কমিউনিকেশন এর মতো বিভিন্ন এডমিনিস্ট্রেটিভ কাজ এর জন্য ক্লায়েন্ট গন ভার্চুয়াল অ্যাসিট্যান্স হায়ার করে থাকেন। ক্লায়েন্ট এর পক্ষ থেকে রেস্টুরেন্টে রিসার্ভেশন, মেডিকেল এপয়নমেন্ট বা কেনাকাটার মতো কাজ করে থাকে একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিট্যান্স।
মূলত ব্যস্ত ব্যবয়াসীগণ তাদের ব্যবসার এসব কাজ করার জন্য একজন ফ্রিল্যান্সার নিয়োগ করে থাকে। একজন ভার্চুয়াল অ্যাসিট্যান্স ঘন্টায় ১২/২০ ডলার পর্যন্ত আয় করে থাকে।
পাবলিক রিলেশন ম্যানেজমেন্টঃ
একটি কোম্পানি ভালোভাবে চালনা করার জন্য একজন পাবলিক রিলেশন ম্যানেজমেন্টের খুব দরকার। তিনি প্রতিষ্ঠানকে কার্যকারী পি আর স্ট্রেটেজি তৈরিতে সাহায্য করেন,যা উক্ত কোম্পানি জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রেস রিলিজ তৈরি, গুরুত্বপূর্ণ মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ স্হাপন ইত্যাদি একজন পিআর ম্যানেজারের কাজ। একজন পিআর ম্যানেজার ঘন্টায় ৫০/১০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
উপরের এই কাজ গুলোর কোন একটি বিষয়ে আপনি দক্ষ হয়ে থাকলে, আপনার দক্ষতা অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিং করে আয় করতে পারবেন। এখন এটির চাহিদা অনেক বেশি। এজন্য এটি থেকে প্রচুর আয় করা যায়। এতোক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ। এরকম আরো নতুন নতুন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইট টি ফলো করুন।